চোর আখ্যা দিয়ে দুই কিশোরকে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দোকানে চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত ১২টার পর নির্যাতনের শিকার এক কিশোরের মা বাদী হয়ে দোকান মালিক আজাদসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও চার–পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন।
এরপর আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকালে দোকান মালিকের ভাই হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃত হাসান আলী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের তারাপুর বাজার এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে।
সূত্র জানায়, তারাপুর বাজারে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদের দোকান থেকে রবিবার রাতে কিছু টাকা, সিগারেট ও পণ্য চুরি হয়। পরে সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয় দুই কিশোরকে রাত ২টার দিকে ডেকে এনে দোকানে আটকে কাঠ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে তাদের কাছ থেকে চুরির স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়।
নির্যাতনের ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সোমবার দুপুরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে এক কিশোরের হাত, মুখ ও গলা চেপে ধরে রেখেছে এবং আরেকজন তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মারছে।
ঘটনার পর সকালে স্থানীয় এক করাতকলে সালিশ বৈঠক হয়। সেখানে ব্যবসায়ী আজাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই কিশোরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এক কিশোরের মা ১০ হাজার টাকা পরিশোধের পর তাদের বাড়ি নিয়ে আসেন।
মামলার বাদী এক ভুক্তভোগীর মা বলেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ছেলে ও তার বন্ধুকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে আজাদ, হাসান, মিজানসহ আরও অনেকে। আমি ন্যায়বিচার চাই।
অন্যদিকে অভিযুক্তদের এক স্বজন বলেন, আমাদের দোকানে চুরি হয়েছে, উল্টো আমাদের নামেই মামলা হয়েছে—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, চুরির সন্দেহে দুই কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/146146