গাজায় শিগগির মোতায়েন হচ্ছে ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী

গাজায় শিগগির মোতায়েন হচ্ছে ২০ হাজার সদস্যের আন্তর্জাতিক বাহিনী

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী খুব শিগগিরই মোতায়েন করা হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এ অঞ্চলে মানবিক সংকট অব্যাহত থাকায় এবং যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের অংশ হিসেবে এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল দৃঢ়ভাবে জানিয়েছে যে তারা গাজায় তুর্কি সশস্ত্র বাহিনীকে গ্রহণ করবে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘এটি খুব দ্রুতই হবে। গাজা পরিস্থিতি ভালোভাবে এগোচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, বেশ কয়েকটি “শক্তিশালী দেশ” এই বাহিনীতে অংশ নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, যাতে হামাসের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে কোনো নিরাপত্তা সমস্যা দেখা দিলে তা মোকাবিলা করা যায়। তবে হামাস এখনো নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কোনো অবস্থান জানায়নি।

এদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় দুই বছরের মেয়াদে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক কাঠামো এবং আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী অনুমোদনের বিষয়ে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা এবং ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেয়ার দায়িত্ব পালন করবে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আল জাজিরাকে বলেন, ‘গাজায় যে কোনো স্থিতিশীলতা বাহিনীকে অবশ্যই পূর্ণ আন্তর্জাতিক বৈধতা নিশ্চিত করতে হবে।’

বাহিনীতে থাকবে কত সদস্য, অংশ নেবে কোন কোন দেশ

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের কাছে খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে। এতে প্রায় ২০ হাজার সদস্যবিশিষ্ট বাহিনীকে প্রয়োজন হলে শক্তি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এই বাহিনীর একটি প্রধান কাজ হবে হামাসের সামরিক সক্ষমতা এবং আক্রমণাত্মক অবকাঠামো ধ্বংস করা এবং তা পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করা।

ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রেক্ষিতে ১০ অক্টোবর গাজায় বন্দি বিনিময় এবং সীমিত অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছিল। যদিও ইসরায়েল পরবর্তীতে বারবার বিমান হামলা চালিয়ে এবং সাহায্য সরবরাহে বাধা দিয়ে সেই অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এই আলোচনায় তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, বিশেষত হামাসকে সমর্থন জোগাতে এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সমর্থন সংগঠিত করতে। সম্প্রতি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনে ইস্তাম্বুলে কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকও করেছে আঙ্কারা।

তবে ইসরায়েল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, গাজায় কোনোভাবেই তুরস্কের সেনা উপস্থিতি মেনে নেয়া হবে না। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পূর্বেই বলেছিলেন যে, ‘গাজায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলই বজায় রাখবে এবং একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী ধরে রাখবে।’ এর পাশাপাশি, মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড প্রধানও জানিয়েছেন, গাজায় কোনো মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে না।

গাজায় যুদ্ধোত্তর প্রশাসন ও নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা জোরদার হলেও, হামাসের অবস্থান, ইসরায়েলের নিরাপত্তা দাবির কঠোরতা এবং আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা- সব মিলিয়ে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়েছে।

পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/145692