বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ জেলায় বিএডিসির ২৫শ’ মে.টন বীজ আলু বরাদ্দ
রংপুর প্রতিনিধি : আসন্ন আলু মৌসুমকে সামনে রেখে বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ জেলার জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) বীজ বিপণন বিভাগ থেকে এবার ২ হাজার ৫৯৫ মেট্রিক টন উচ্চমানের বীজ আলু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব বীজ রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
রংপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক (বীজ বিপণন) মাসুদ সুলতান জানান, বরাদ্দকৃত বীজ আলু তেরটি জাতের। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কার্ডিনাল, গ্রানোলা, সানসাইন, সান্তানা, কুম্বিকা, ল্যাবেলা, সেভেন ফোরসহ অন্যান্য উন্নত জাতের আলু বীজ। এসব বীজ বিএডিসির বিভিন্ন আঞ্চলিক কেন্দ্র কুড়িগ্রাম, নীলফামারীর ডোমার, কাশিপুর, জামালপুর, শেরপুর, নলকা, মালতি, কিশোরগঞ্জ, পাকুন্দিয়া, শ্রীমঙ্গল, পঞ্চগড়, উল্লাপাড়া ও দত্তনগর থেকে সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হবে।
তিনি আরও জানান, বরাদ্দকৃত বীজের ১০ শতাংশ কৃষক পর্যায়ে সরাসরি সরবরাহ শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। বাকি ৯০ শতাংশ বীজ ডিলার পর্যায়ে বিক্রি করা হবে ধাপে ধাপে।
বিএডিসির বীজ বিপণন বিভাগের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহত্তর রংপুরের পাঁচ জেলায় মোট ৮১৫ জন অনুমোদিত ডিলার রয়েছেন। এর মধ্যে রংপুর জেলা ও মহানগরে ২১৮ জন, কুড়িগ্রামে ১৬৬ জন, লালমনিরহাটে ১২৮ জন, গাইবান্ধায় ১৬৬ জন এবং নীলফামারীতে ১৩৭ জন ডিলার বরাদ্দ পেয়েছেন। তাদের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত ২ হাজার ৫৯৫ মেট্রিক টন বীজ আলু কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
বীজ আলুর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এ-গ্রেডের জন্য প্রতি কেজি ৩৫ টাকা এবং বি-গ্রেডের জন্য ৩৪ টাকা। এছাড়া বরাদ্দের মধ্যে প্রায় ২৬০ মেট্রিক টন বীজ আলু কৃষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বীজ উৎপাদনকারী সংস্থা ও বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাছে সরবরাহ করা হবে গবেষণা ও পুন:উৎপাদনের জন্য।
স্থানীয় কৃষক সোলায়মান আলী জানান, বিএডিসির বীজ আলুর মান অনেক ভালো। এসব বীজে ফলনও বেশি পাওয়া যায়। তবে সরবরাহের পরিমাণ অল্প হওয়ায় অনেক কৃষক সরকারি বীজ না পেয়ে বাজারের নিম্নমানের বীজ কিনতে বাধ্য হন। গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমরা চাই এবার সার ও কীটনাশকের দাম যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে।
অন্যদিকে, রংপুরের বীজ ডিলার নাসির হোসেন বলেন, গত মৌসুমে আলুর দাম না পেয়ে কৃষকরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে এবার অনেকেই আলু চাষে আগ্রহ হারিয়েছে। তাই বিএডিসি থেকে যে বীজ আলু বরাদ্দ পেয়েছি, এখনও চাহিদা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ মৌসুম আশা করছি বিক্রি বেড়ে যাবে।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, উত্তরাঞ্চলের এ পাঁচ জেলায় প্রতিবছরই আলু চাষের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রংপুর অঞ্চলের উর্বর মাটি ও উপযুক্ত জলবায়ুর কারণে এ অঞ্চলের আলু দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় গুণগত মানে ভালো হয়। তাই সরকারি পর্যায়ে বীজ বরাদ্দ বৃদ্ধি, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সার-ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখলে এ অঞ্চলের আলু উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
পোস্ট লিংক : https://www.dailykaratoa.com/article/145627