শহীদ মীর মুগ্ধর যমজ ভাই স্নিগ্ধ বিএনপিতে যোগ দেয়ার কারণ জানালেন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিতে যোগ দেয়ার কয়েকটি কারণ জানিয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধর যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার অনেক জায়গা আছে, যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে তিনি আগ্রহী বলে জানান। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে মুগ্ধ লেখেন, জুলাইয়ের পর থেকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে জোয়ার উঠেছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, সেই তরুণদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমিও সামাজিকভাবে নানা কার্যক্রমের প্রতিনিধিত্ব করেছি। পাশাপাশি তরুণদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে রাজনৈতিক পরিবর্তনের যে প্রচেষ্টা চলছে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছি।তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে আমি বা আমার ভাইদের কেউই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না।

মুগ্ধ একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে তাই আমি মনে করি মুগ্ধসহ সব শহীদ কোনো রাজনৈতিক দলের নয় তারা সব মানুষ এবং দেশের সম্পদ। রাজনীতিতে আসার বিষয়ে মুগ্ধ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং এই নতুন বাস্তবতায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করছি। এবং সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে চাই।তিনি আরও বলেন, অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে জুলাইকে নানাভাবে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি, এখন সময় এসেছে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার।
নিজের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার পেছনে অন্যতম কয়েকটি কারণ তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজনীতিতে আসার পেছনে কয়েকটি কারণ হলো-সর্বোচ্চ জায়গা থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা। জুলাই শহীদ, আহত যোদ্ধা, শহীদ পরিবার এবং সর্বোপরি জুলাইয়ের ভয়েস হয়ে উঠা, রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং বাংলাদেশপন্থি ও জুলাইপন্থি সব অংশীজনের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা।
বিএনপিতে যোগ দেয়ার কারণ জানিয়ে মুগ্ধ বলেন, প্রথমত বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। তাছাড়া বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখার অনেক জায়গা আছে যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে আমি আগ্রহী।
দ্বিতীয় কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি মনে করি সব পরিসরে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। তাই আমি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হচ্ছি। এতে করে জুলাইয়ের ঐক্য শক্তিশালী এবং দীর্ঘায়িত হবে বলে আমি মনে করি। তাছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চাচ্ছেন যে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করি যা আমারও অন্যতম রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার একটি। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল এবং তরুণদের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরিতে ভুমিকা রাখতে পারবো বলে আমি মনে করি।
তবে সর্বোপরি সব রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ ও জুলাইপন্থি সবার সাথে কাজ করে যেতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য। আমার এই পথচলায় সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করছি।
সবশেষ তিনি লেখেন, আরেকটি বিষয়, এতদিন যত দায়িত্ব আমি পালন করেছি সব দায়িত্ব নিষ্ঠা এবং সততার সাথে পালন করেছি। যদি কোনো অভিযোগ থাকে দয়া করে অভিযোগে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রমাণসহ উপস্থাপন করবেন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে এতটুকু সংস্কার তো আমরা আশা করতেই পারি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে গুলশান চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ সংগ্রহ করেন মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। এ সময় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।